বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা এখন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়—বরং এটি একটি দায়িত্ব এবং সচেতন নাগরিকের কর্তব্য। প্রতি বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে এর জন্য আইনগত ও আর্থিকভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেকেই দেরিতে রিটার্ন জমা দিয়ে ভাবেন, “পরেও তো জমা দিলাম, সমস্যা কী?” কিন্তু বাস্তবে এই ‘দেরি’ থেকেই শুরু হয় জটিলতা, বাড়ে জরিমানা, হারিয়ে যায় কর সুবিধা। আজ Helpink আপনাকে জানাবে, দেরিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল করলে কী কী আর্থিক ক্ষতি হয়, এবং আপনি কিভাবে সহজেই এই ক্ষতি থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেন।
প্রথমেই আসা যাক জরিমানার বিষয়ে। আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রিটার্ন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় পার হলে প্রথমেই আপনার ওপর ধার্য হতে পারে ‘সারচার্জ’। প্রতিমাসে ২% হারে এই সারচার্জ আরোপ করা হয় আপনার বকেয়া কর বা উহার অংশবিশেষের উপর। মানে, আপনি যদি সময়মতো রিটার্ন দাখিল না করেন এবং আপনার প্রদেয় কর থাকে, তাহলে প্রতি মাসে ২% হারে অতিরিক্ত অর্থ গুণতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে এই সারচার্জ ৬ মাস পর্যন্ত চলে, অর্থাৎ ১২% পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতি। এর বাইরে, কর কমিশনার (DCT) চাইলে আপনার ওপর আরও বাড়তি জরিমানা আরোপ করতে পারেন, যা আপনার মোট করের ১০% পর্যন্ত হতে পারে বা সর্বনিম্ন ৫,০০০ টাকা—যেটা বেশি।
কিন্তু ক্ষতির এখানেই শেষ নয়। যারা ব্যবসা করেন বা ফ্রিল্যান্স, কনসালট্যান্সি বা যেকোনো পেশাগত আয় করেন, তারা জানেন ‘loss carry forward’ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো বছরে আপনার ব্যবসায়িক বা পেশাগত ক্ষতি হয়, তাহলে সেটি আপনি পরবর্তী বছরে মুনাফার বিপরীতে সমন্বয় করতে পারেন এবং কর কমাতে পারেন। তবে শর্ত একটাই—এই ক্ষতির তথ্য আপনাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিটার্নে দেখাতে হবে। আপনি যদি দেরিতে রিটার্ন দাখিল করেন, তাহলে সেই বছরের ক্ষতি আর পরের বছরে ব্যবহার করতে পারবেন না। মানে, আপনি ভবিষ্যতে যেসব কর ছাড় পেতে পারতেন, তা আপনি হারিয়ে ফেলবেন।
এর বাইরেও রয়েছে একাধিক অপূরণীয় ক্ষতি। যেমন, যদি আপনার ওপর কর কাটা হয়ে থাকে এবং আপনি বেশি কর দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি রিটার্নের মাধ্যমে রিফান্ড ক্লেইম করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি দেরি করেন, তাহলে এই রিফান্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যাবে বা আপনার দাবি বাতিল হতে পারে। আবার অনেক সময় ব্যাংক লোন, বিদেশ যাত্রা বা সরকারি সেবা গ্রহণের সময় আপনার ট্যাক্স রিটার্ন আপডেট থাকা বাধ্যতামূলক হয়। আপনি যদি নিয়মিত রিটার্ন দাখিল না করে থাকেন বা দেরি করেন, তবে এসব ক্ষেত্রে আপনি সমস্যায় পড়বেন।
আরেকটি বড় ঝুঁকি হলো ‘Best Judgement Assessment’। আপনি যদি রিটার্ন না দেন বা দেরি করেন, তবে কর অফিস (DCT) আপনার বিরুদ্ধে একতরফাভাবে কর নির্ধারণ করতে পারে—যার ওপর আপনার আপত্তি করার সুযোগ অনেক সীমিত। এই নির্ধারণে আপনার প্রকৃত আয়, খরচ বা ক্ষতির হিসাব বিবেচনায় না এনে, অনুমানভিত্তিকভাবে আপনাকে কর দিতে হতে পারে, যা অনেক সময় অতিরিক্ত অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে।
Helpink বিশ্বাস করে, সচেতন হোন, সময়মতো রিটার্ন দিন, এবং আপনার মূল্যবান টাকার ক্ষতি রোধ করুন। আমাদের পেশাদার ট্যাক্স কনসালট্যান্ট টিম আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গাইড করবে—যেমনঃ আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট বিশ্লেষণ, ইনকাম স্টেটমেন্ট তৈরি, সঠিক কর পরিমাণ নির্ধারণ, অনলাইনে দাখিল, এবং জরুরি প্রয়োজনে এনবিআর-এ যোগাযোগ। আপনি যদি ব্যস্ত থাকেন বা এই জটিল প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত না হন, তাহলে Helpink হতে পারে আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।